যশোর ব্যুরো: যশোরের বাঘারপাড়ায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগে চারজনকে আটক করে পিটুনি দিয়েছেন স্থানীয়রা। এরপর তাদের পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ তাদের কাছ থেকে লাল রঙের প্রাইভেট কার, মোবাইল ফোন, পুরোনো ক্যামেরা, সাংবাদিকের পরিচয়পত্র ও অ্যাসাইনমেন্টের কপি জব্দ করেছে।
উপজেলার খাজুরা বাজারে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ওই চারজন হলেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার বাউশিয়া গ্রামের মো. নুরুদ্দিন, একই উপজেলা কলসেরকান্দি গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম, রাজধানীর বংশালের আগামাসি লেনের এস এম শাহজাহান ও যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া মেঠোপাড়া গ্রামের রাজিয়া সুলতানা ডলি।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আটক ব্যক্তিদের বরাতে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা খাজুরা বাজারের আশার আলো সমবায় সমিতিতে গিয়ে নিজেদের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। তারা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ওই সমিতির লোকজনের কাছে কাগজপত্র চান। সমিতির কর্মকর্তা তাদের কাছে সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র ও কাগজপত্র দেখতে চাওয়ার অনুমতিপত্র চান।
ওসি আরও জানান, সন্দেহ হলে সমিতির কর্মকর্তারা খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ওই চারজনকে পিটুনি দেন।
পুলিশ গেলে স্থানীয়রা জানান, ওই ব্যক্তিরা গত বুধবার আরও কয়েকটি সমবায় সমিতিতে গিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও লাইসেন্স বাতিলের ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
আশার আলো সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘অফিসে এসে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করি। তাৎক্ষণিক আমি সমিতির সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভোলাকে ফোন করে ডাকি। এ সময় তারা অফিস অডিটের (অ্যাসাইনেন্ট কপি) একটি ভুয়া অনুমতিপত্র দেখায় আমাদের। কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা সবাই ঘাবড়ে গেলে আমরা পুলিশকে খবর দিই।’
স্বপ্নের সেতু নামে স্থানীয় আরেক সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক উজ্জ্বল নন্দী অভিযোগ করে বলেন, ‘বুধবার সকালে তারা অফিসে এসে খাতাপত্র দেখে বলে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। এ সময় সমিতির লাইসেন্স বাতিলের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা নেয়। সেদিন একই কৌশলে তারা সাহসী সমবায় সমিতি থেকে ২০ হাজার টাকা ও খাজুরা সমবায় সমিতি থেকে ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।’
বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দীন জানান, আটক ব্যক্তিদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা প্রকৃত সাংবাদিক কি না সেটিও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।